সোমবার, ২৩ ডিসেম্বর, ২০২৪
ঢাকা সোমবার, ২৩ ডিসেম্বর, ২০২৪, ৮ পৌষ ১৪৩১
The Daily Post

সাতক্ষীরায় আমের সরবরাহ বাড়ায় দামে লোকসানের আশঙ্কা 

সাতক্ষীরা প্রতিনিধি 

সাতক্ষীরায় আমের সরবরাহ বাড়ায় দামে লোকসানের আশঙ্কা 

সাতক্ষীরায় আম পঞ্জিকা পরিবর্তন করে সংগ্রহের তারিখ এগিয়ে আনায় শুরুতেই বাজারে আমের সরবরাহ বেড়েছে কয়েক গুন। ফলে জেলায় আনুষ্ঠানিকভাবে আম পাড়ার তৃতীয় দিনেই দাম নিয়ে হতাশ হয়ে পড়েছেন চাষীরা।

গত রেবাবার বাজারে সবধরনের আমের দাম ছিল গত মৌসুমের তুলনায় প্রায় অর্ধেক। পাইকারি বাজারে আমের এই দাম অব্যহত থাকলে লোকসানের আশঙ্কা করছেন আমচাষী ও ব্যবসায়িরা।

মৌসুমের শুরুতেই আমের দাম কম থাকার কারণ হিসেবে সাতক্ষীরার সুলতানপুর বড়বাজারের আড়তদাররা জানান, জেলা প্রশাসন ও কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের ঘোষিত আম পঞ্জিকা অনুযায়ি গোবন্দিভোগ, বোম্বাই ও গোলাপখাসসহ স্থানীয় জাতের আম সংগ্রহের দিন ছিল ১২ মে।

যে কারণে চাষীরা বাগানের আম পাড়তে পারেনি। কিন্তু হঠাৎ করে ওই তারিখ এগিয়ে ৫ মে করায় প্রথম দিনেই বাজারে আমের সরবরাহ বেড়ে গেছে। ফলে হঠাৎ করে সরবরাহ বেশি হওয়ার কারণেই আমের দরপতন হয়েছে।

সাতক্ষীরার তালা উপজেলা নগরঘাটা গ্রামের আম ব্যবসায়ী নুরুল ইসলাম দাম বেশি পাওয়ার আশায় গত রোববার মৌসুমের প্রথম দিন আড়তে ৬০ মণ আম নিয়ে আসেন। কিন্তু জেলার সবচেয়ে বড় মোকাম সাতক্ষীরা শহরের সুলতানপুর বড়বাজারে এসেই হতাশ হয়েছেন আমের দাম দেখে। 

গত মৌসুমের প্রথম দিকে এই বড়বাজার আড়তে গোবিন্দভোগ আম বিক্রি করেছিলেন মণ প্রতি ২ হাজার ৯০০ টাকা থেকে ৩ হাজার টাকা দরে। গত রোবাবর একই বাজারে গোবিন্দভোগ বিক্রি করেছেন ১ হাজার ৫০০ টাকা মণ দরে। বোম্বাই ও গোলাপখাস আমও গত বছরের একই সময়ের তুলনায় অর্ধেক দামে বিক্রি করেছেন।

নুরুল ইসলাম আরও বলেন, বাগান ক্রয়, পরিচর্যা, শ্রমিক ও অন্য খরচ বাদ দিয়ে প্রতি মণ গোবিন্দভোগ আম উৎপাদন খরচ পড়েছে কমপক্ষে ২ হাজার টাকার উপরে। সেখানে বাজারে প্রতি মণ আম বিক্রি হয়েছে দেড় হাজার থেকে ১৮শ টাকা দরে। ফলে বাজারে এমন দাম গেলে আটটি বাগানে তার কয়েক লাখ টাকা লোকসান হবে।

সাতক্ষীরা বড়বাজারের আম বিক্রিকারক আড়তদার মেসার্স মর্জিনা ভান্ডারের স্বত্বাধিকারী কামরুল ইসলাম জানান, বাজারের সব আড়তে আমে সয়লাব হয়ে গেছে। একদিনেই কয়েক হাজার মণ আম উঠেছে সুলতানপুর বড় বাজারের আড়তে। যে কারণে ভালো দাম পাচ্ছেন না চাষী বা ব্যবসায়িরা। 

সাতক্ষীরা জেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের উপ-পরিচালক মো. সাইফুল ইসলাম বলেন, এবার জেলায় চার হাজার ১৩৫ হেক্টর জমিতে আম চাষ হয়েছে। লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয়েছে ৪৫ হাজার ৫০০ মেট্রিক টন। আম বাগান রয়েছে ৫ হাজার ২৯৯টি। আম চাষীর সংখ্যা ১৩ হাজার ১০০জন। দেশের চাহিদা মিটিয়ে ২২৫ কোটি টাকার আম বিক্রি করা যাবে।

তিনি আরো বলেন, অন্তত ১৫-১৬ জাতের আম উৎপাদন হয়, যা স্থানীয় চাহিদা মিটিয়ে দেশের বিভিন্ন অঞ্চলে সরবরাহ করা হয়। এবার আমের উৎপাদনের লক্ষ্যমাত্রা ছাড়িয়ে যাবে আশা করা যাচ্ছে।

টিএইচ